ঢাকা , রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫ , ৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

​ব্যস্ততা বেড়েছে নৌকা তৈরির কারিগরদের

স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় : ২০-০৭-২০২৫ ০২:৪৬:৫৪ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ২০-০৭-২০২৫ ০৬:৩০:৫৪ অপরাহ্ন
​ব্যস্ততা বেড়েছে নৌকা তৈরির কারিগরদের সংবাদচিত্র: সংগৃহীত
কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় সড়ক যোগাযোগব্যবস্থা ভালো থাকায় কখনোই তেমন চাহিদা ছিল না নৌকার। তবে গত বছরের আগস্টে গোমতী ও শালদা নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার মুখোমুখি হয়েছিল এই উপজেলাবাসী। সেই ভয়াবহ বন্যায় নৌকার অভাব মানুষকে ভুগিয়েছিল।

যার ফলে আবারও আকস্মিক বন্যায় যেন নৌকার অভাবে বিপাকে পড়তে না হয় সে জন্য এবার বর্ষাকালে এই উপজেলার অনেকেই নৌকা সংগ্রহ করছেন। এতে বিগত বছরগুলোর তুলনায় এখানে নৌকার চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। আর নৌকার চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় কারিগররা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন।

সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার সদর ইউনিয়নের নাইঘর গ্রামে নৌকা তৈরি করছেন দুই ভাই সুভাষ সূত্রধর ও সাদন সূত্রধর। সারা বছর তারা কাঠ দিয়ে বিভিন্ন আসবাব তৈরি করেন। তবে বর্ষাকাল এলে তারা নিয়মিত কাজের পাশাপাশি নৌকা তৈরি করেন। নৌকার তেমন চাহিদা নেই বলে প্রতি বছর গুটিকয়েক নৌকা তৈরি করতেন।তবে গত বছর ভয়াবহ বন্যার সময় তারা তাদের কর্মজীবনের সবচেয়ে বেশি নৌকা তৈরি ও বিক্রি করেছেন। এবার বর্ষার শুরু থেকে বিগত বছরগুলোর তুলনায় নৌকার অর্ডার বেশি পাচ্ছেন। তাই তারা এখন নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

সুভাষ সূত্রধর বলেন, বর্ষার সময় এলে প্রতি বছর দু-চারটা নৌকা বিক্রি হতো। সারা বছর কাঠের কাজের পাশাপাশি বর্ষায় নৌকা তৈরি ও বিক্রি ছিল নামমাত্র। তবে গত বছর বন্যার সময় ও এ বছর বর্ষার শুরু থেকে নৌকার ভালোই অর্ডার পাচ্ছি। এতে নিয়মিত কাজের পাশাপাশি নৌকা বিক্রি করে বাড়তি আয় করতে পারছি।সাদন সূত্রধর বলেন, হাওর অঞ্চলের তুলনায় এ উপজেলায় নৌকার ব্যবহার নেই বললেই চলে। আর এ কারণে এই উপজেলায় নৌকার তেমন চাহিদাও ছিল না। তবে গত বছরের আগস্টের আকস্মিক বন্যায় মানুষ নৌকার অভাবে অনেক কষ্ট পেয়েছিল। আর এজন্যই এ বছর বর্ষাকাল আসতেই নৌকার অর্ডার পাচ্ছি। আসবাবপত্র তৈরির পাশাপাশি নৌকা তৈরি করতে অতিরিক্ত শ্রম দিতে হচ্ছে।

মফিজুল ইসলাম নামে এক ক্রেতা বলেন, গত বছরের বন্যায় নৌকা না থাকায় পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্ট করতে হয়েছে। তাই এবার একটি ডিঙি নৌকা কিনেছি। আল্লাহ না করুক এবার বন্যা হলে অন্তত নৌকার অভাবে কষ্ট ভোগ করতে হবে না। আর বন্যা না হলে নৌকাটি বাড়ির পাশের খালে ডুবিয়ে রাখব।লিটন মিয়া নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, আমাদের এই উপজেলায় নৌকানির্ভর এলাকা নেই বললেই চলে। তবে গত বছরের বন্যার সময় এই উপজেলায় নৌকার অভাব প্রকট আকার ধারণ করেছিল। সে সময় নৌকার অভাবে মানুষ কষ্ট পেয়েছিল। তাই অনেকে এবার বর্ষাকালে নৌকা কিনছেন।মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আমির হোসেন বলেন, এই উপজেলায় নৌপথের ব্যবহার নেই। এজন্য নৌকার চাহিদাও নেই। তবে অনেক বছর পর এই উপজেলায় গত বছর ভয়ংকর বন্যা হয়েছিল। সে সময় পর্যাপ্ত নৌকা না থাকায় স্থানীয় মানুষজন খুব কষ্ট ভোগ করেছিলেন। তাই এবার বর্ষা মৌসুমে অনেকেই নৌকা সংগ্রহ করছেন।

বাংলাস্কুপ/প্রতিনিধি/এনআইএন


প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স


এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ